এ,কে,আজাদ
![]() |
নতুন নতুন তথ্য পেতে পেজটিতে লাইক ও শেয়ার করুন বাংলাদেশ আনসার তথ্য সেবা কেন্দ্র । https://facebook.com/bdansarbahini/ |
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময় তাদের ভাতা একশ’ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে আনসার-ভিডিপির প্লাটুন ও সহযোগী প্লাটুন কমান্ডের (পিসি/এপিসি) প্রস্তাবিত দৈনিক ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৫০ টাকা। বর্তমানে তারা পাচ্ছেন ৫২৫ টাকা। পাশাপাশি আনসারের জন্য ৯৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের ভাতার পরিমাণ ৪৭৫ টাকা।
সম্প্রতি অর্থ বিভাগে এ প্রস্তাবটি পাঠানো হয়। প্রস্তাবে নির্বাচনের সময় প্রত্যেক আনসার-ভিডিপি সদস্য অতিরিক্ত ৫ দিন দায়িত্ব পালনের জন্য বর্ধিত ভাতায় ব্যয় বাবদ ২৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
জানতে চাইলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান স্বাধীন বাংলা ২৬ কে জানান, ভোট কেন্দ্রগুলোতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগী হিসেবে আনসার-ভিডিপির সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে শিগগির একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে পারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। আনসার বাহিনী থেকেও নেয়া হচ্ছে বিশেষ প্রস্তুতি।
নির্বাচনে সারা দেশে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। এসব কেন্দ্রে আনসার বাহিনীর ৪ লাখ ৮২ হাজার ২৩৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এ বাহিনীর সদস্যরা সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন। পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচনের পরও তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখা হয়।
সূত্রমতে, অর্থ বিভাগে পাঠানো ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবে বলা হয়, নির্বাচনে সমতল ও পার্বত্য উভয় ভূমিতে অবস্থিত ভোট কেন্দ্রে পাঁচ দিন দায়িত্ব পালন করতে হবে আনসার-ভিডিপির সদস্যদের। এ ক্ষেত্রে তাদের ভাতার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ এতে সদস্য ও তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফুটবে। অপরদিকে দায়িত্ব পালনে তাদের আগ্রহ, আন্তরিকতা, মনোবল ও অঙ্গীকার সুদৃঢ় হবে।
জানা গেছে, যে কোনো নির্বাচনের সময় ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকালে আনসার-ভিডিপির সদস্যদের দৈনিক ভাতা দেয়া হয়। বিদ্যমান আইনে এ ভাতা আবার দু’ধরনের রয়েছে। সমতল ভূমিতে অবস্থিত ভোট কেন্দ্র এবং পাহাড়ি এলাকার জন্য পৃথক ভাতা।
পার্বত্য এলাকার জন্য ভাতার পরিমাণ বেশি নির্ধারণ করা আছে। বর্তমানে পার্বত্য এলাকায় দায়িত্ব পালনের জন্য একজন আনসারের পিসি বা এপিসি দৈনিক ভাতা পাচ্ছেন ৫৫০ টাকা এবং আনসার পাচ্ছেন ৫০০ টাকা হারে। আর সমতল ভূমিতে দায়িত্ব পালনকালে পিসি বা এপিসির ভাতা ৫২৫ টাকা আর আনসার পাচ্ছেন ৪৭৫ টাকা। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী পার্বত্য অঞ্চলের জন্য পিসি বা এপিসির জন্য ১১০০ টাকা ও আনসারের ১০০০ টাকা ভাতা নির্ধারণ করতে বলা হয়।
পাশাপাশি সমতল ভূমিতে পিসি ও এপিসি পদের জন্য ১০৫০ টাকা এবং আনসারের জন্য ৯৫০ টাকা নির্ধারণ করতে বলা হয়। ওই প্রস্তাবে নির্বাচনের সময় পাঁচ দিনের দায়িত্ব পালনে আনসার-ভিডিপির ভাতা বাবদ ২৪৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে অর্থ বিভাগের কাছে।
এর মধ্যে সমতল ভূমিতে ৩৯ হাজার ৬২৯টি ভোট কেন্দ্রের ব্যয় দেখানো হয় ২৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং পাহাড়ি অঞ্চলের ৫৭০টি ভোট কেন্দ্রের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩ কোটি ৬১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। সেখানে বলা হয়, সমতল ভূমির একটি ভোট কেন্দ্রে ২ জন পিসি ও এপিসি পাঁচ দিন দায়িত্ব পালনে বর্ধিত ভাতায় তার পেছনে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৫০০ টাকা।
আর পার্বত্য অঞ্চলে এ ব্যয় দাঁড়াবে ১১ হাজার টাকায়। পাশাপাশি সমতল ভূমির একটি ভোট কেন্দ্রে ১০ জন আনসারের পেছনে একই সময়ে ব্যয় হবে ৫০ হাজার টাকা এবং পাহাড়ি অঞ্চলে এ ব্যয় দাঁড়াবে ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন অনেক কষ্টের বিষয়।
আনসার সদস্যদের নির্বাচনের কিছুদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় কখনও নির্বাচনের পরও তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হয়। আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়া সত্ত্বেও আনসার বাহিনীর সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় কোনোরূপ পারিশ্রমিক ছাড়াই স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে গ্রামীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর থাকেন।
তারা শুধু নির্বাচন, পূজাসহ কিছু ঘটনায় স্বল্পকালীন মেয়াদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগী হয়ে কাজ করেন। বিনিময়ে কয়েক দিনের ভাতা পেয়ে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় এনে নির্বাচনকালীন ভাতার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন।